বর্তমান সময়ে গাড়ি পার্কিং নিয়ে এক ধরনের শঙ্কা কাজ করে অনেকের মনে। এ নিয়ে কথা হচ্ছিল একজন রাইড শেয়ার কারী ভাইয়ার সঙ্গে, পার্কিং নিয়ে তার হতাশার বিষয়টি বলছিলেন। এই আধুনিক যুগে এসেও এমন নিরাপত্তার অভাব তাকে খুব ভাবাচ্ছিল। পার্কিং এ গাড়িটি পার্ক করে যেন সারাক্ষণ একটা দুশ্চিন্তা তাড়া করে বেড়ায়। ক্ষোভের সাথে বলছিলেন, একটা পার্কিং স্পেসে নিরাপত্তার এত অভাব। পার্কিং এ কোন ব্যারিয়ার নেই, কোন অটোমেটিক টিকিটিং এর ব্যবস্থা নেই। চাইলেই যে কেউ গাড়ি নিয়ে পার্কিং এর ভেতরে প্রবেশ করতে পারে, যখন খুশি বের হয়ে যেতে পারে।
এ যেন এক যা-তা অবস্থা।
পার্কিং এর এই অনিরাপদ ব্যবস্থাকে নিরাপদ পার্কিং স্পেসে পরিণত করতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে যে জিনিসটি সেইটি হলো পার্কিং ব্যারিয়ার। আপনার পার্কিং এর এন্ট্রি মুখে একটি মাত্র ব্যারিয়ার আপনার পার্কিংকে অনেক বেশি নিরাপদ করে তুলবে।
ব্যারিয়ার পরিচিতিঃ
পার্কিং এর এন্ট্রি মুখে আনঅথোরাইজড গাড়ির প্রবেশ এবং প্রস্থান ঠেকাতে মূলত পার্কিং ব্যারিয়ার ব্যবহার হয়। পার্কিং ব্যারিয়ারের প্রধান কাজ বাধা সৃষ্টি করা। এই ব্যারিয়ার যে শুধু পার্কিং এর কাজে ব্যবহার করা যাবে তা কিন্তু না। ট্রাফিক নিন্ত্রনের ক্ষেত্রে, রাস্তা বা সেতুর টোল আদায় করতে বা আবাসিক বাড়ির পার্কিং বা মেইন গেটে নিরাপত্তার জন্য ব্যবহার হতে পারে এই বিশেষ যন্ত্রটি।
পার্কিং এ ব্যারিয়ার না থাকলে কি কি সমস্যা হয়ঃ
১) নিরাপত্তার অভাবঃ
আপনার পার্কিং এর এন্ট্রি মুখে যদি একটি ব্যারিয়ার থাকে খুব সহজেই আনঅথোরাইজড গাড়ির প্রবেশ, প্রস্থান রোধ করতে পারবেন। এবং খুব সহজেই একটি গাড়ির গতিরোধ করতে পারবেন। চাইলেই কেউ একজন পার্কিং এর ভেতর থেকে গাড়ি নিয়ে বের হতে পারবে না। পার্কিং ব্যারিয়ারের মাধ্যমে আপনি এটা রোধ করতে পারবেন।
২) পার্কিং মুখে গাড়িকে সারিবদ্ধ ভাবে প্রবেশ করাতে ঝামেলা হয়ঃ
আপনার পার্কিং মুখে যখন কোন ব্যারিয়ার থাকবে না তখন গাড়ি গুলো সারিবদ্ধ ভাবে প্রবেশ করবে না। কোন নিয়ম না থাকার ফলে একটি বিশৃঙ্খল পরিবেশের সৃষ্টি হবে এবং পুরো পার্কিং ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ করা আপনার জন্য কষ্টসাধ্য হবে।
৩) পেমেন্টের ক্ষেত্রে ঝামেলা হয়ঃ
আপনার পার্কিং স্পেস যদি কমার্শিয়াল হয় সে ক্ষেত্রে পেমেন্টের বিষয়টি আসে। এ ক্ষেত্রে যে সমস্যাটি হয় তা হলো, কোন ধরনের বাধা না থাকার ফলে অনেকে পেমেন্ট না করে বেরিয়ে যায়। কিন্তু যদি আপনার পার্কিং গেটে ব্যারিয়ার লাগানো থাকে তাহলে এই সমস্যা হবে না।
৪) পার্কিং ম্যানেজমেন্ট করতে কম সংখ্যক লোক লাগবেঃ
একটি মাত্র ব্যরিয়ার আপনার পার্কিং ম্যানেজমেন্টকে অনেক সহজ করে দিবে এবং কম সংখ্যক লোকের মাধ্যমে পার্কিং নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। পূর্বে যেখানে ৩-৪ জন লোকের প্রয়োজন হতো ব্যারিয়ার লাগানোর ফলে ১ জন লোকের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। এর ফলে আপনার পুরো পার্কিং ম্যানেজমেন্ট এর খরচ কমে আসবে অনেকটা।
পার্কিং নিয়ে যে সকল সমস্যার কথা বলছি এই প্রতিটা সমস্যার সমধান হবে এই পার্কিং ব্যারিয়ারের মাধ্যমে।
কি কি ধরনের ব্যারিয়ার হতে পারেঃ
প্রয়োজন ভেদে দুই ধরনের পার্কিং ব্যারিয়ার হয়ে থাকে। একটি হলো ফোল্ডিং আর্ম ব্যারিয়ার অন্যটি হলো স্ট্রেট আর্ম ব্যারিয়ার।
ভালো মানের ব্যারিয়ার বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয়ঃ
আপনি অবশ্যই ভালো মানের একটি ব্যারিয়ার আশা করেন। তো, এর জন্য আপনি কি কি বিষয়ে লক্ষ্য রাখবেন, যেই বিষয়গুলো জানা থাকলে ভালো একটি ব্যারিয়ার বাছাই করতে সুবিধা হবে।
১। আপনি খেয়াল করবেন ব্যারিয়ারের যে আর্ম থাকে তা উঠতে এবং নামতে কি পরিমাণ সময় লাগে
২। এর লোডিং ক্যাপাসিটি কেমন এবং ব্যারিয়ারটির যে মেটারিয়াল দিয়ে তৈরি তার মান কেমন এই সকল বিষয় খেয়াল রেখে আপনি আপনার পছন্দের ব্যারিয়ার বাছাই করতে পারেন।
৩। এছাড়াও আপনি ব্র্যান্ডের দিকটা খেয়াল করতে পারেন, যেমন বাংলাদেশে ইউরোপিয়ান এবং চাইনিজ এই দুই ব্র্যান্ডের ব্যারিয়ার পাওয়া যায়। ইউরোপিয়ান ব্যারিয়ারের দামটা চাইনিজ ব্যারিয়ারের তুলনায় একটু বেশি।
এই সকল বিষয়ে লক্ষ্য রেখে আপনি একটি ভালো মানের ব্যারিয়ার সংগ্রহ করতে পারেন।
পার্কিং এর যে সকল এডভান্স সেবা সমূহ নিয়ে আপনি ভাবতে পারেনঃ
পার্কিং ব্যারিয়ার, স্মার্ট পার্কিং সিস্টেমের সামান্য অংশ মাত্র। আপনি আপনার পার্কিং স্পেসকে যদি সম্পূর্ণ অটোমেটেড করতে চান তাহলে
- পার্কিং সিক্যুরিটি সিস্টেম
- পার্কিং টিকিটিং সিস্টেম
- পার্কিং গাইডেন্স সিস্টেম এই সেবা গুলো নিয়ে ভাবতে পারেন।
সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে স্মার্ট পার্কিং সিস্টেম এখন সময়ের দাবি। একটি বৈধ পার্কিং ব্যবস্থা একই সাথে অনেক গুলো ভালো কাজের সাক্ষী হয়ে থাকতে পারে। তাই আপনার কমার্শিয়াল অথবা আবাসিক যে কোন বিল্ডিং এর পার্কিং স্পেসকে স্মার্ট পার্কিং সিস্টেম করতে একটি পদক্ষেপ নিতেই পারেন।
1,577 total views, 1 views today