ভাবুনতো, আজ থেকে সামাজিক যোগাযোগের সব মাধ্যমগুলো বন্ধ হয়ে গেল। কিংবা তথ্য খুঁজতে আর গুগল এ তোলপার করা যাচ্ছেনা। ভাবতেই কেমন শিউরে উঠছে তাইনা? হ্যাঁ, আজকের দিনে ইন্টারনেটের সাথে সখ্যতা নতুন করে বলার কিছু নেই। এই একটি জায়গায় এসে মানুষের সময়ের কোন কমতি থাকেনা। থাকবেই বা কেন এখানে যে পুরো বিশ্বের সাথে নিজেকে যুক্ত করা যায়।
১৯৫০ সালে ইলেকট্রনিক কম্পিউটারের অগ্রগতির সাথে সাথে শুরু হয় ইন্টারনেট এর ইতিহাস। কম্পিউটারের সাফল্যের সাথে সাথে মানুষ প্রয়োজন অনুভব করল তথ্য আদান-প্রদান এর। আর সে কারণেই শুরু হয় ইন্টারনেট গবেষণা। ১৯৬০ সালের শেষের দিকে মার্কিন সামরিক বাহিনীর গবেষণা সংস্থা ‘অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সি’ পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণাকেন্দ্রের মধ্যে নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা চালু করে। এর আগে পল ব্যারন এক ধরনের নেটওয়ার্ক পদ্ধতি তৈরি করেন যার নাম ছিল ম্যাসেজ ব্লক।
পরবর্তীতে লিওনার্ড ক্লেইনরক এ প্রযুক্তির গাণিতিক ত্বত্ত্ব তৈরী করলেন। আবিষ্কার হল আরো উন্নত প্যাকেট সুইচিং প্রযুক্তির নেটওয়ার্ক যেখানে ম্যাসেজগুলো ভাগ হয়ে আরবিট্রারি প্যাকেটে পরিণত হয় এবং রাউটিং ডিসিশন প্রতিটি প্যাকেটে নেটওয়ার্কিং ডিজাইন তৈরি করে।
এরপর ১৯৭৩ সালে রবার্ট কান ও ভিন্টন সার্ফ এর হাত ধরে প্রথমবারের মত তৈরী হয় ট্রান্সমিশন কন্ট্রোল প্রটোকল এবং ইন্টারনেট প্রটোকল যা সংক্ষেপে টিসিপি/আইপি। ডাটা ট্রান্সমিশনের ক্ষেত্রে এটি ছিল উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন প্রযুক্তি যেখানে ত্রুটির সংখ্যা ছিল খুবই সামান্য। মূলত এই নেটওয়ার্কিং সিস্টেমকেই ইন্টারনেটের ভিত্তি হিসেবে ধরা হয়। দিনে দিনে সাধারন মানুষের কাছে ইন্টারনেট ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে আইবিএম সহ অন্যন্য প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রমেই এ নেটওয়ার্কিং এর সাথে যুক্ত হয়।
১৯৯১ সালে টিম বার্নার্সলির তৈরি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব (WWW) ইন্টারনেট ইতিহাসে ব্যাপক পরিবর্তন আনে। আজকের অধিকাংশ ওয়েব সাইট ও পেইজগুলো এর সাথে সংযুক্ত। আমরা ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার, ফায়ারফক্স কিংবা গুগোল ক্রোম এর সাথে বেশ পরিচিত কিন্তু বিশ্বের প্রথম ওয়েব ব্রাউজারের কথাকি আমরা জানি? জিম ক্লার্ক ও মাইক এন্ড্রিসন তৈরি করেছিলেন বিশ্বের প্রথম ওয়েব ব্রাউজার মোজাইক। কিন্তু জনপ্রিয়তা পাবার আগেই এর প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে আসে নেটস্কেপ। যা সে সময় ব্যপক লাভজনক প্রজেক্টে পরিণত হয়।
সবমিলিয়ে হাজার মানুষের ছোট ছোট প্রচেষ্টায় ইন্টারনেট আজ আমাদের হাতের মুঠোয়। আর ইন্টারনেটের প্রভাব আমাদের জীবনে কতটা জুড়ে তা নিশ্চই আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।
535 total views, 2 views today